গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সেরে যাওয়ার পরও সচেতনতা জরুরি কেন.

 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সেরে যাওয়ার পরও সচেতনতা জরুরি কেন.


আধুনিক বিশ্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অচেনা কোনো সমস্যা নয়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এর প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীর মধ্যে প্রায় ১৩ জন এ রোগে আক্রান্ত হন।

আধুনিক বিশ্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অচেনা কোনো সমস্যা নয়
আধুনিক বিশ্বে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অচেনা কোনো সমস্যা নয়ছবি: পেক্সেলস

কেন হয়

গর্ভাবস্থার আগে যাঁরা কখনোই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন না, তাঁদের গর্ভধারণের সাধারণত ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহে রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে তাঁরা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আক্রান্ত বলে ধরা হয়। অধিক বয়সে গর্ভধারণ, স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন, বারবার গর্ভধারণ, যমজ সন্তান, আগের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ইতিহাস, পলিসিস্টিক ওভারি ইত্যাদি কারণে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়। মূলত গর্ভধারণের সময় গর্ভফুল থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন হরমোন ইনসুলিনের কার্যক্রমে বাধা দেয় বলে এই ডায়াবেটিস দেখা দেয়।


এটা কি আপনা–আপনি সেরে যায়

স্বস্তির বিষয়, প্রসবের পর ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়। বাস্তবে এটিই একমাত্র ডায়াবেটিস, যা সম্পূর্ণভাবে সেরে যায়। বাকি ১০ শতাংশের বেলায় এটি প্রিডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস হিসেবে থেকে যেতে পারে। সন্তান প্রসবের ৬ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে একটি ওজিটিটি টেস্টের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পুরোপুরি সেরে গেছে কি না।


সচেতনতা জরুরি কেন

পুরোপুরি সেরে গেলেও পরবর্তী জীবনে এই নারীদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ বেশি। তবে চাইলে এই ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। চিনি, মিষ্টি ও সাদা শর্করা–জাতীয় খাবার বর্জন, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ধূমপান পরিহার ও মানসিক চাপমুক্ত জীবন যাপন অনেকাংশেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। তাই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সেরে যাওয়ার পরও সচেতনতা জরুরি।

ডা. অঞ্জনা সাহা, হরমোন ও ডায়াবেটিস রোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা


Post a Comment

0 Comments